কেন আল্লাহ্ একমাত্র আরবি ভাষাকেই বেছে নিলেন?
আল্লাহ্ কুরআনের জন্য আরবি ভাষাকে বেছে নিয়েছেন শুধু ভাষার জন্য নয়, বরং এর অনন্য গুণ, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট, এবং শেষ নবীর (ﷺ) আগমনের সময়কার বিশ্ব পরিস্থিতির জন্য।
১. ভাষার শক্তি ও কাঠামো
আরবি এমন এক ভাষা যার শব্দভাণ্ডার ও ব্যাকরণ অত্যন্ত সমৃদ্ধ, নমনীয় এবং সূক্ষ্ম।
-
একেকটি মূল ধাতু (root) থেকে বহু অর্থবাহী শব্দ গঠন করা যায়।
-
ছোট্ট শব্দ দিয়েও গভীর, বহুস্তর অর্থ প্রকাশ করা সম্ভব।
-
কাব্যিক ও মৌখিক প্রকাশ ক্ষমতা ছিল তৎকালীন সব ভাষার তুলনায় অদ্বিতীয়।
২. সংরক্ষণে সহজতা
তখনকার যুগে আরবরা ছিল অসাধারণ স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন মৌখিক সংস্কৃতির অধিকারী।
-
তারা শত শত লাইন কবিতা মুখস্থ করত।
-
একটি শব্দের উচ্চারণ বা বিন্যাস বদলালেই সবাই বুঝতে পারত ভুল হয়েছে।
এভাবে আরবি ভাষায় নাজিল হওয়া ও মুখে মুখে প্রচার হওয়া কুরআন অক্ষরে অক্ষরে অপরিবর্তিত থাকা সহজ হয়েছিল।
৩. শেষ নবীর ভূগোল ও কৌশল
মক্কা ছিল আরব উপদ্বীপের বাণিজ্য ও যোগাযোগের কেন্দ্র।
-
এখানে থেকে বার্তা ছড়িয়ে পড়া সহজ ছিল - পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণে।
-
আরবরা তখন নানা গোত্রে বিভক্ত থাকলেও ভাষা ছিল মূলত এক - ফলে এক ভাষায় ওহি নাজিল হওয়া সবার কাছে একযোগে পৌঁছাতে পেরেছে।
৪. কুরআনের মুজিজা (অলৌকিকতা)
কুরআন শুধু বিষয়বস্তু নয়, এর ভাষাগত শৈলীই এক মুজিজা।
-
আরবরা সাহিত্য ও কবিতায় গর্ব করত, অথচ তারা কুরআনের অনন্যতা মেনে নিয়েছে - “এটি মানুষের কথা নয়”।
-
তাই আল্লাহ্ এমন ভাষা বেছে নিলেন যা দিয়ে তাঁর ওহির শ্রেষ্ঠত্ব যুগে যুগে চ্যালেঞ্জহীন থাকবে।
৫. আল্লাহর ইলাহি পরিকল্পনা
শেষ নবী (ﷺ) সর্বজনীন বার্তা নিয়ে এসেছেন - তাই আল্লাহ্ এমন সময়, এমন ভাষা ও এমন স্থান বেছে নিয়েছেন যেখান থেকে দাওয়াত দ্রুত ছড়াতে পারে।
ভাষা ছিল একমাত্র উপাদান নয়, বরং ভূগোল, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত হিকমত একসঙ্গে কাজ করেছে।
কুরআন বলছে:
"আর নিশ্চয়ই আমি এটি নাজিল করেছি আরবি ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝতে পারো" (সূরা ইউসুফ 12:2)
যদি কুরআন অন্য ভাষায় নাজিল হত তবে কী হতো?
Comments
Post a Comment